বর্ষাকালের রুপ ও বিবরন (shape and details of the rainy season)
বর্ষাকাল
বাংলা বর্ষের দ্বিতীয় ঋতু এবং এর স্থিতি আষাঢ় ও শ্রাবণ (জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত) এ দু মাস।নিচে বর্ষাকালের কিছু দৃশ্য ও বিবরন দেওয়া হলঃ
গ্রামের রাস্তা
বর্ষার বৃষ্টি
বর্ষাকাল বাংলা বর্ষের দ্বিতীয় ঋতু এবং এর স্থিতি আষাঢ় ও শ্রাবণ
(জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত) এ দু মাস। প্রকৃতপক্ষে বৈশাখের শেষ থেকে কার্তিকের প্রথম ভাগ (অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি) পর্যন্ত বর্ষার ব্যাপ্তি থাকে। শরৎ ও হেমন্ত ঋতু দুটি বর্ষা ঋতুর সামান্য পরিবর্তিত চেহারা মাত্র। বর্ষাকালে আবহাওয়া সর্বদা উষ্ণ থাকে। এ সময় দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প বহন করে আনে যার প্রভাবে বর্ষার আকাশ প্রায়ই মেঘাচ্ছন্ন থাকে এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয়। বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের ৮০ ভাগেরও অধিক বর্ষাকালেই সংঘটিত হয়ে থাকে। অত্যধিক বৃষ্টিপাতের দরুণ অধিকাংশ প্লাবনভূমিই বর্ষাকালে প্লাবিত হয়ে পড়ে। স্থানীয় উচ্চতা ভেদে বন্যার গভীরতা ও স্থায়িত্বকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন সিলেট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও পাবনা জেলার বিল, ঝিল ও হাওরসমূহ বছরে ছয় মাসেরও অধিককাল ধরে প্লাবিত থাকে। দেশের অন্যত্র বিশেষ করে, মধ্যভাগে বন্যার স্থায়িত্বকাল ৩ থেকে ৪ মাস। এ সময় গ্রামাঞ্চলে যাতায়াতের জন্য নৌকা হয়ে ওঠে প্রধান মাধ্যম।
গ্রীষ্মের প্রখর উত্তাপে শুষ্ক ও মৃতপ্রায় বৃক্ষলতা, তৃণ প্রভৃতি বর্ষার শীতল জলধারায় নবজীবন লাভ করে। তখন পল্লী প্রকৃতির সর্বত্র সবুজের সমারোহ দেখা যায়। বর্ষায় চারদিকে পানি থৈ থৈ করে। নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর-ডোবা কানায় কানায় ভরে ওঠে। বিলে বিলে হেলেঞ্চা ও কলমিলতার সমারোহ দেখা যায়। আরও দেখা যায় জাতীয় ফুল শাপলা-র সমারোহ। বর্ষাকালে কেয়া, কদম, কামিনী, জুঁই, গন্ধরাজ প্রভৃতি সুগন্ধি ফুল প্রস্ফুটিত হয় এবং পেয়ারা, আনারস, বাতাবি লেবু প্রভৃতি ফল প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এ সময় হাটে-বাজারে প্রচুর ইলিশ মাছ পাওয়া যায়।
বর্ষার শুরুতে কৃষককুল সোনালি পাট ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং বন্যামুক্ত অথবা স্বল্প প্লাবিত এলাকায় ধানের নতুন চারা রোপণ করে। বর্ষার বারিধারা লোকালয়ের আবর্জনা ধুয়েমুছে দেয় এবং দূষিত বায়ু বিশুদ্ধ করে। বর্ষাই এ দেশকে সুজলা-সুফলা ও শস্য-শ্যামলা করেছে।
No comments:
Post a Comment