Sunday 22 January 2017

বসন্তকালের রুপ ও বিবরন shape and details of the spring season


বসন্তকাল  বাংলা বর্ষপঞ্জির সর্বশেষ ঋতু। শীতের পর বসন্তকাল বাংলাদেশের প্রকৃতিতে রমণীয় শোভা বিস্তার করে আবির্ভূত হয়।নিচে বসন্তকালের কিছু দৃশ্য ও বিবরনঃ




                                                                                 পাকোর ফুল
natural image


টলি গাড়ি
                                                                           টলি পরিবহন
বসন্তকাল
বসন্তকালের রাস্তা


বসন্তের কোকিল
                                                                     বসন্তের কোকিল


ফাল্গুন চৈত্র মাস (ফেব্রুয়ারির মধ্যভা থেকে এপ্রিলের মধ্যভাগ পর্যন্ত) নিয়ে বসন্তকাল হলেও প্রকৃতপক্ষে শুধুমাত্র মার্চ মাসেই ঋতুটির সংক্ষিপ্ত অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। ঋতুতে বায়ু নানা দিক থেকে প্রবাহিত হয়, কোনো নির্দিষ্ট দিকে স্থির থাকে না। শীতের উত্তুরে তথা উত্তর-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তে গ্রীষ্মের দক্ষিণা অথবা দক্ষিণ-পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হতে শুরু করার ক্রান্তিকালে বায়ুপ্রবাহের দুরন্তপনা শুরু হয়। বসন্তের আবহাওয়া থাকে মনোরম, আকাশে কিছু কিছু মেঘ থাকলেও সার্বিক আবহাওয়া থাকে নির্মল। কদাচিত মার্চের দ্বিতীয়ার্ধে অপরাহ্নে বিচ্ছিন্নভাবে  ব্জ্রঝড়  হয়ে থাকে।

ঋতুতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বড়ই চমৎকার হয়ে ওঠে। তরুলতাসমূহ নতুন পত্রপুষ্পে সুশোভিত হয়। রক্তবর্ণের শিমুল, পলাশ কৃষ্ণচূড়া সময়েই ফোটে। আম্রবৃক্ষসকল নব মঞ্জরীতে শোভিত হয়। বৃক্ষের অন্তরালে থেকে কোকিল সুমধুর কুহু স্বরে দিক-দিগন্ত মুখরিত করে তোলে। ভ্রমর মনের আনন্দে গুঞ্জন করতে করতে সুগন্ধি পুষ্প আম্র মঞ্জরীর মধু পানে মত্ত হয়। যব, গম, সরিষা ইত্যাদি শস্যে মাঠগুলি রমণীয় শোভা ধারণ করে। ঋতুতে হিন্দুদের বাসন্তী পূজা, দোলযাত্রা প্রভৃতি উৎসব মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হয়। বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। সময়টি নাতিশীতোষ্ণ, তাই পরম সুখকর। মার্চ মাসে সারা দেশে গড় তাপমাত্রা ২২° থেকে ২৫° সে-এর মধ্যে উঠানামা করে। আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকে মাত্র ৫০ থেকে ৭০ ভাগ। সময় প্রভাতে সন্ধ্যাবেলায় ভ্রমণ স্বাস্থ্প্রদ। তবে কখনও কখনও কলেরা, বসন্ত প্রভৃতি মারাত্মক ব্যাধিরও আবির্ভাব ঘটে ঋতুতে।

দক্ষিণে সমুদ্র, উত্তরে হিমালয় পর্বত এবং বিশাল সমভূমির জন্য বাংলাদেশে শীত বা গ্রীষ্ম কোনোটিরই আধিক্য অনুভূত হয় না। বাংলাদেশের নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু প্রকৃতির কিছু ব্যতিক্রম বৈরিতা ছাড়া অত্যন্ত আরামপ্রদ। বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবহণ যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যবসাবাণিজ্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি তথা সামগ্রিক জীবনধারা ষড়ঋতুর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত।  [রফিক আহমদ এবং সমবারু চন্দ্র মহন্ত]

নদীনালা, খালবিলসহ জলাশয়ের পানি শুকিয়ে যায় ঋতুতে দিন বড় আর রাত ছোট হয় সময় পশ্চিমা মৌসুমি বায়ু দেশের উপর দিয়ে বইতে শুরু করে আবার পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শীতল শুষ্ক বায়ুও প্রবাহিত হয় মহাসাগর থেকে আগত মেঘতাড়িত বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে শীতল শুষ্ক বায়ু মুখোমুখি পরস্পরের সংস্পর্শে এলে তা প্রবল ঝড়ের রূপ ধারণ করে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের দুটি বায়ুপুঞ্জসৃষ্ট ঝড়কে  কালবৈশাখী নামে আখ্যায়িত করা হয় যার ধ্বংসাত্মক রূপ ভূখন্ডের অধিবাসীদের কাছে অতি পরিচিত

গ্রীষ্ম দিয়েই শুরু হয় বাংলা বর্ষ। গ্রীষ্মের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের-এর প্রথম দিন হিসেবে উদযাপিত হয়। ঋতুতে হিন্দুরা জামাইষষ্ঠীসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। গ্রীষ্মকাল ফলের ঋতু।  আম, জাম, জামরুলকাঁঠাল, আনারস, পেয়ারা, লিচু, তরমুজ, আমড়া প্রভৃতি সুস্বাদু ফল ঋতুতেই জন্মে। গোলাপ, বকুল, বেলি, টগর, জবা প্রভৃতি সুগন্ধি ফুলও সময়ে ফোটে

2 comments:

Comments system

Disqus Shortname